যদি আপনি বাংলাদেশী হন এবং আপনি কোন ব্যক্তিগত কাজে বিদেশে অবস্থান করেন আর আপনার সন্তান বিদেশে জন্মগ্রহন করে তবে আপনার প্রয়োজন হবে সন্তানের জন্য বাংলাদেশী পাসপোর্টের। পূর্বে বিদেশে অবস্থান করে বাংলাদেশী পাসপোর্ট করার নিয়ম ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার ২২ জানুয়ারী ২০২০ সালে বিশ্বর ১১৯ তম দেশ হিসাবে ঘোষনা করেন ই পাসপোর্ট। যার ফলে এখন বিদেশে অবস্থান করে নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে অনলাইনেই বিদেশে জন্ম গ্রহণকারী সন্তানের জন্য ই পাসপোর্ট তৈরি করে নিতে পারবেন। আজকের এই পোস্টে বিদেশে জন্ম গ্রহণকারী সন্তানের জন্য ই পাসপোর্ট করার নিয়ম, কাগজপত্র, ফি প্রদানের নিয়ম ও পাসপোর্ট প্রাপ্তির বিষয়ে আলোচনা করছি।
অনলাইনেই বিদেশে জন্ম গ্রহণকারী সন্তানের জন্য ই পাসপোর্ট তৈরি করে নিতে পারবেন।
ই পাসপোর্ট আবেদন কিভাবে করা যাবে?
বিদেশে জন্ম গ্রহণকারী সন্তানের জন্য ই পাসপোর্টের আবেদন ২ ভাবে করা যায়।
- স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে
- অনলাইনে
স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে আবেদন পক্রিয়া
বাংলাদেশী নাগরিকের জন্মগ্রহণকারী নবজাতক সন্তানের পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে পূরণকৃত ফরম ও নিয়মে বর্ণিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বাবা/মা-কে নবজাতক সন্তানসহ হাইকমিশনে উপস্থিত হয়ে অফিস কাউন্টারে নির্ধারিত ফি প্রদানপূর্বক আবেদনপত্র জমা দিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করিয়ে নিতে পারবেন।
অনলাইনে আবেদন পক্রিয়া
পাসপোর্ট আবেদন ফরম অনলাইনে পূরণের ক্ষেত্রে অবশ্যই নিদের্শনাবলী অনুসরণ করতে হবে। যদি কোন প্রকার ভুল করে থাকেন তার জন্য আপনাকে পরে ভোগান্তি পেতে হবে।
অনলাইনে (www.passport.gov.bd) সঠিকভাবে পূরণপূর্বক জমা (Submit) প্রদানকৃত আবেদনের (চার পাতা) প্রিন্ট করে নিতে হবে।
অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম বিস্তারিত জানতে এই পোস্টটি পড়ুন অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম
ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
বিদেশে জন্ম গ্রহণকারী সন্তানের জন্য ই পাসপোর্ট করার জন্য নিম্নোক্ত বিষয়াবলী মেনে চলতে হবে।
- অনলাইনে ফরম পূরণের সময় বাবার পাসপোর্টের স্থায়ী ঠিকানা সন্তানের ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করতে হবে।
- নবজাতকের সদ্যতোলা ০২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি (৪৫x৩৫মি.মি).
- ছবির বাকগ্রউন্ড সাদা হবে, ছবি।
- তোলার সময় বাচ্চার চোখ খোলা ও দৃষ্টি সামনের দিকে থাকবে।
- নবজাতকের বাবা ও মা- প্রত্যেকের ০১ কপি করে পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- বাবা ও মা- প্রত্যেকের পাসপোর্টের ২ ও ৩ নং পৃষ্ঠার ফটোকপি।
- বাবা-মা’র বিবাহের সনদপত্র/কাবিননামা।
- যে দেশে জন্মগ্রহন করেছে সেই দেশের ICA কর্তৃক প্রদত্ত জন্মসনদ।
- বাংলাদেশ হাইকমিশন হতে নবজাতকের জন্মসনদ প্রাপ্তির জন্য অনলাইনে (www.lgd.gov.bd) পূরণকৃত ফরম/অনলাইনে ফরম পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী।
ই পাসপোর্ট এর জন্য বিদেশি ফি
প্রবাস থেকে ই পাসপোর্ট তৈরির ফি এক এক দেশ থেকে এক এক রকম। কেননা এক এক দেশের টাকার মূল্যমান ভিন্ন ভিন্ন। তাই এখানে দূতাবাস অনুযায়ী আলাদা আলাদা পাসপোর্ট ফি দেওয়া হলো। আর আপনি যদি নিম্নে উল্লেখ নেই এমন কোন দেশ হতে ই পাসপোর্টের ফি কি রকম তা জানতে চান তাহলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
সিঙ্গাপুর দূতাবাসঃ
সাধারণঃ ফি ১৫৫ সিঙ্গাপুরি ডলার – প্রসেসিং সময়কাল ৬-৭ সপ্তাহ।
জরুরীঃ ফি ৩১০ সিঙ্গাপুরি ডলার প্রসেসিং সময়কাল ৩-৪ সপ্তাহ।
ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম
অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন করার পর, আবেদনটি কোন পর্যায়ে আছে তা আপনি অনলাইন থেকেই জানতে পারবেন।
অনলাইনে পাসপোর্ট চেক করার নিয়মটি খুবই সহজ। ই পাসপোর্টের বর্তমান স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন এখানে- ই পাসপোর্ট স্ট্যাটাস চেক
কিভাবে ই পাসপোর্ট চেক করবেন এবং বিভিন্ন পাসপোর্ট স্ট্যাটাস এর অর্থ ও ব্যাখ্যা জানতে পড়ুন – পাসপোর্ট স্ট্যাটাস ডিটেলস
ই পাসপোর্ট সংগ্রহ
সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক অনলাইনে আবেদন এনরোলমেন্ট করা হয় এবং নতুন পাসপোর্ট সংগ্রহের তারিখ উল্লেখ করে আবেদনকারীকে একটি কালেকশন স্লিপ/রিসিট দেওয়া হয়। অত:পর এমআরপি সার্ভারে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্ক্যান করে অনলাইনে আবেদন অনুমোদনপূর্বক পাসপোর্ট প্রিন্টের জন্য প্রেরণ করা হয়। বাংলাদেশ থেকে পাসপোর্ট প্রিন্ট হয়ে আসলে কালেকশন স্লিপ/রিসিট ও জন্মসনদ দেখে নতুন পাসপোর্ট প্রদান করা হয়ে থাকে- যা হাইকমিশনের অফিস কাউন্টার থেকে সংগ্রহ করতে হয়।